Assistant Headmaster
সোনামুখী বিদ্যালয় বাংলাদেশের উত্তরবঙ্গের জয়পুরহাট জেলার প্রাচীন ও ঐতিহ্যবাহী বিদ্যাপীঠ যা এই অঞ্চলের মানুষের মেধাবিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনে সোনামুখী উচ্চ বিদ্যালয় রয়েছে অনন্য অবদান। মুক্তিযুদ্ধের সময় আক্কেলপুর উপজেলার মুক্তিযোদ্ধাদের অনেকেই ছিল এই বিদ্যালয়ের ছাত্র। প্রাচীন ও ঐতিহ্যবাহী এই বিদ্যালয় অনেক মেধাবী সূর্যসন্তানের জন্ম দিয়েছে এবং সুনামের সঙ্গে আজো মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে । ১৯০৪ সালে তুলশীগঙ্গা নদীর দক্ষিণ পূর্ব তীরে সোনামুখী ছিল তখন রমরমা বন্দর। সাপ্তাহিক হাট বসতো রোববার, শোনা যায় শনিবার দুপুরের পরপরই হাট লেগে যেতো। বিভিন্ন এলাকার হাটুরেদের আনাগোনায় ভারী হয়ে ওঠতো গঞ্জের বাতাস। সোনামুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রতিষ্টাতা প্রধান শিক্ষক স্বর্গীয় শশীভূষন চক্রবর্তী (বি.এ.বি.টি,এইচ,এম,বি) ১৮৬৬ খ্রিস্টাব্দের ১৫ জুন নওগাঁ জেলার বদলগাছী উপজেলার বালুভরা গ্রামে এক সম্ভ্রান্ত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বি এ বি টি করা এই ভদ্রলোক ১৯০৪ সালে ততকালীন পশ্চিম বগুড়ার বিখ্যাত নদীবন্দর খ্যাত সোনামুখী গ্রামে এলাকার গন্যমান্য ব্যক্তিদের সহায়তার একটি মাইনর ইংলিশ স্কুল প্রতিষ্ঠা করেন এবং তিনি প্রতিষ্ঠাতা প্রধান শিক্ষক এর দায়িত্ব পালন করেন । ১৯১৬ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বীকৃতপ্রাপ্ত হয়ে হাইস্কুলে রুপান্তরিত হয়। তৎকালীন সময়ে বর্তমান জয়পুরহাট জেলার মধ্যে সোনামুখী উচ্চ বিদ্যালয়,কালাই এম,ইউ উচ্চ বিদ্যালয় এবং খঞ্জনপুর উচ্চ বিদ্যালয় ছাড়া আর কোন স্কুল ছিল তৎকালীন অত্র অঞ্চলের জমিদার কৈলাশ গোবিন্দ বিশ্বাস সাং চক্রপাড়া অত্র বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাকালীন সেক্রেটারি ছিলেন। জমি দান করেছেন রাজকান্দা গ্রামের শিক্ষানুরাগী পেশা তালুকদারী গঙ্গানন্দ দাস, পিতা আনন্দ চন্দ্র দাস গ্রামঃ রাজকান্দা থানা আদমদিঘী, জেলা বগুড়া। জনহিতার্থে এম.ই স্কুল থেকে হাই স্কুল করনার্থে ১৯১৫ সালের ২৫ ডিসেম্বর তারিখে জমি দানের লিখিত অনুমতি দান করেন। পরবর্তীতে ০২/১০/১৯২০ সালে ৬৭৫১ নম্বর রেজিস্ট্রি দলিল মূলে মকিমপুর মৌজা নামজাদে সোনামুখী মৌজায় আনুমানিক ১০ বিঘা জমি স্কুলের নামে লিখে দেন। এলাকার সর্বসাধারনের সাহায্য ও সহযোগিতায় গড়ে উঠেছে এই ঐতিহ্যবাহী বিদ্যাপীঠ সোনামুখী উচ্চ বিদ্যালয়।বর্তমানে এই প্রাচীন ও ঐতিহ্যবাহী সোনামুখী উচ্চ বিদ্যালয় জয়পুরহাট জেলার অন্তর্গত আক্কেলপুর উপজেলার পৌর সভার ৯ নং ওয়ার্ডে মুকিমপুর,চক্রপাড়া ও মানিকপাড়া মৌজায় সোনামুখী নামক স্থানে অবস্থিত। বর্তমানে বিদ্যালয়টি ৫.০৪ একর জমির উপর প্রতিষ্ঠিত। বিদ্যালয়ের রয়েছে একটি বড় খেলার মাঠ ও ১টি ছোট খেলার মাঠ । বিদ্যালয়ের উত্তর পাশ দিয়ে বয়ে গেছে তুলশীগঙ্গা নদী । বিদ্যালয় ক্যাম্পাস বিভিন্ন প্রজাতির বৃক্ষ দ্বারা সুশোভিত, ফলে শিক্ষার মনোরম পরিবেশ বিরাজ করছে। বিদ্যালয়টির ৫টি বিল্ডিং রয়েছে যার মোট কক্ষ সংখ্যা ১৫ টি। ১০ টি শ্রেণী কক্ষ, ১টি অফিস কক্ষ, ১টি সাধারণ শিক্ষক কক্ষ, ১ টি লাইব্রেরী , ১ টি বিজ্ঞানাগার, ১ টি ছাত্রী কমন রুম, ১টি মসজিদ, ১টি হল রুম রয়েছে। পানীয় জল ও স্যানিটেশন ব্যবস্থা সন্তোষজনক। ১টি সাবমারসিবল পাম্প, পানি সাপ্লায়ের ব্যবস্থা, ৪টি টিউবয়েল এবং শিক্ষক ও ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য আলাদা শৌচাগার রয়েছে। বিদ্যালয়টি বর্তমানে জয়পুরহাট জেলার আক্কেলপুর উপজেলার পৌরসভার অন্তর্গত ৯নং ওয়ার্ডে অবস্থিত (পোষ্টকোড ৫৯৪০), জয়পুরহাট ও পার্শ্ববর্তী জেলা বগুড়া শহর থেকে সরাসরি যোগাযোগের সুব্যবস্থা রয়েছে। বগুড়া-আক্কেলপুর রোডের পাশে আক্কেলপুর শহর থেকে ২ কিমি পূর্ব দিকে অবস্থিত। গুগল ম্যাপে বিদ্যালয়ের সঙ্গে যোগাযোগের সকল সংযোগ সড়ক দেখা যাবে।